কখনও বালি, কখনও কয়লা, কখনও আবার কোনও ঠিকাদারি সংস্থার থেকে তোলাবাজির নেওয়ার অভিযোগ। কাঠগড়ায় অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা রামকৃষ্ণ ঘোষ। জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য তিনি। ইতিমধ্যে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কয়েকজনের সাক্ষর করা একটি অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
যদিও, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ মানতে নারাজ রামকৃষ্ণবাবু।
কে রামকৃষ্ণ ঘোষ?
আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন ধনকুড়া গ্রামের বাসিন্দা সুভাষ মণ্ডল। তাঁকে ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ভাতার কেন্দ্রে প্রার্থী করে দল। তিনি বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকে দলের সভাপতির পদে রামকৃষ্ণ ঘোষকে দায়িত্ব দেন খোদ অনুব্রত মণ্ডল। সেই থেকেই রামকৃষ্ণ ঘোষের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
সূত্রের খবর, পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের কোটা অঞ্চলের রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ ঘোষ। ডেকরেটর সামগ্রীর ব্যবসা রয়েছে তাঁর। তৃণমূলের ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরই ঠিকাদারি, বেআইনি বালির কারবার, বেআইনি কয়লার কারবার থেকে প্রচুর টাকা রোজগার করেন রামকৃষ্ণ ঘোষ। এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। অভিযোগ, রাস্তা-ঘাট তৈরির টেণ্ডার এলেও তা রামকৃষ্ণর দ্বারাই পরিচালনা করা হয়।
এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, গ্রামে তিনতলা বাড়ি ছাড়াও ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দু’টি বাড়ি তৈরি করেছেন কয়েক কোটি টাকা দিয়ে। এর আগেও রামকৃষ্ণ ঘোষের বেআইনি কারবার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জানানো হয়েছিল। তবে ফল কিছুই হয়নি বলে খবর। শেষে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ সাবির হোসেনের বলেন, “আগে বিড়ি চেয়ে লোকের কাছে খেত। এখন বাজারে তিনতলা বাড়ি। জায়গা কিনেছেন। দামি গাড়ি। চালচলন বদলে গেছে। পঞ্চায়েতের একটা অডিটেই দুর্নীতি ধরা পড়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে কয়লা, গরু সব পাচার হয়। ওনারা আসেন বসেন ডিল করেন। এই সব করেই প্রচুর টাকা ইনকাম করেছেন। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি করেছি। দেখা যাক কী হয়।’
গ্রামবাসী উত্তম আঁকুড়ে বলেন, “রামকৃষ্ণ ঘোষ আগে প্যাণ্ডেলের ব্যবসা করতেন। ব্লক সভাপতি হয়ে যাওয়ার পর অনেক জমিজায়গা,বাড়ি কিনেছেন। দু’মাস আগেও একটা বাড়ি কিনেছেন। পার্টির নেতাতো…। বালি, কয়লা, অনেক রকম কারবার আছে।”
তবে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রামকৃষ্ণ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,”ওসব বিরোধীদের চক্রান্ত। আমার জমিজায়গা যা আছে সেগুলো আমার পৈতৃক সম্পত্তি। আমি প্যান্ডেলের ব্যবসা করি। আমার স্ত্রী কলেজে চাকরি করেন। সেই চাকরি ২০০৮ সালে পাওয়া। আমার দাদা বিজ্ঞানী।
আমার ভাই ইঞ্জিনিয়র। ভাইয়ের কলকাতায় নিজস্ব কারখানা আছে। আমাদের জমিজায়গা, পুকুর যা আছে তা বাপঠাকুরদার কাছ থেকে পাওয়া। যাঁরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করছে তাঁদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করব।
No comments:
Post a Comment